শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড,

 শেখ হাসিনা আসাদুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড, সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশ, চৌধুরী মামুনের বছর কারাদণ্ড



জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কার্যক্রম শুরু করে ট্রাইব্যুনাল ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় ঘোষণা করে। ছয়টি অংশে বিভক্ত এই রায়ে বলা হয়—শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত হয়েছেদুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে এবং একটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হওয়ায় পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণা পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “জুলাই বিপ্লবের শহীদরা ন্যায়বিচার পেয়েছে, রাষ্ট্র ন্যায়বিচার পেয়েছে।” তিনি আরও বলেন, দুই আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি এবং রাজসাক্ষীকে বিবেচনায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁর ভাষায়, “শহীদদের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি এবং আইনের শাসনের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে এ রায় একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, যা বাংলাদেশের ন্যায়বিচারের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।”

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা যেদিন গ্রেপ্তার হবেন, সেদিন থেকেই তাঁর সাজা কার্যকর হবে।

এদিন ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেন। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। রায়ের অংশ হিসেবে শহীদ পরিবারের সদস্য এবং আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

রায়কে “ন্যায় প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠ ঘটনা” বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি জানান, শেখ হাসিনাকে দেশে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে আবারও চিঠি দেবে সরকার

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে অত্যন্ত জটিল মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। তাঁর মতে, যে ধরনের সাক্ষ্য–প্রমাণ আদালতে উপস্থাপিত হয়েছে, তা বিশ্বের যে কোনো আদালতের মানদণ্ডে টিকে যাবে এবং একই ধরনের রায়ই পাওয়া যেত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ