জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা



জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নবিষয়ক গণভোট ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানান।

এর আগে উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন করা হয়। পরে রাষ্ট্রপতি আদেশটি জারি করেন, ফলে সনদটি আইনি ভিত্তি পায়।

ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা জানান, সংবিধান-সংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাব চার ভাগে ভাগ করে একটিমাত্র প্রশ্নে গণভোট নেওয়া হবে। এতে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হবে এবং PR পদ্ধতিতে ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষ গঠিত হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ৮৪টি প্রস্তাবের মধ্যে ৩০টিতে রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য হয়েছে বলে জানান তিনি। বিএনপির কিছু আপত্তি থাকলেও সরকার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এগোচ্ছে।

অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরে ইউনূস বলেন, এফডিআই গত এক বছরে ১৯.১৩ শতাংশ বেড়েছে। আগামী সপ্তাহে এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল প্রকল্পে ৫৫০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগচুক্তি সই হবে।


একদিনেই নির্বাচন ও গণভোট: পাল্টে যাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভূচিত্র

বাংলাদেশের ইতিহাসে সম্ভবত প্রথমবার—জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এক নতুন রাজনৈতিক যাত্রার পথ খুলে দিলেন।

এই ঘোষণার আগের নয় মাস কাটে রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সমাজের টানাপোড়েন আর আলোচনায়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এক এক করে সাজিয়েছে ৮৪টি প্রস্তাব—ভাষা থেকে বিচার বিভাগ, নারী প্রতিনিধিত্ব থেকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা পর্যন্ত।

কিন্তু সবচেয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে উচ্চকক্ষ। ১০০ সদস্যের এই নতুন কক্ষটি গঠিত হবে ভোটের শতকরা হারে—যেখানে বড় দল ছোট দলের ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে না। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ হলে সংসদ আর আগের রূপে থাকবে না।

এই রূপান্তরের পেছনে আরেকটি বেদনাবিধুর গল্প আছে—২০২৪ সালের জুলাইয়ের রাস্তাজুড়ে যে মানুষের রক্ত, যে চোখের জল, যে আত্মত্যাগ, সেখান থেকেই জন্ম নিয়েছে নতুন সনদের দাবি। ইউনূস তাঁর ভাষণে সেই স্মৃতিচারণ করেন, ১৩৩ শিশু ও শত শত তরুণ-তরুণীর মৃত্যু স্মরণ করিয়ে দেন।

কিন্তু পরিবর্তনের পথে বাধাও আছে। বিএনপি কিছু প্রস্তাবে ভিন্নমত পোষণ করছে, বিশেষ করে উচ্চকক্ষের গঠন নিয়ে। তবুও রাজনীতি এগোচ্ছে নিজের গতিতে। দেশের অর্থনীতিও পেয়েছে গতি—এফডিআই বেড়েছে, ব্যাংকিং খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, লালদিয়া টার্মিনাল প্রকল্পে ইউরোপের সর্বোচ্চ বিনিয়োগও আসছে।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভোটদানের উৎসব যখন শুরু হবে, তখনই নির্ধারিত হবে—বাংলাদেশ কোন পথে হাঁটতে চায়।


একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট—বাংলাদেশ কি নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে?

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক বড় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে—আগামী জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে। আমার মনে হয়, এ সিদ্ধান্তটি কেবল প্রশাসনিক কাজ নয়; এটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৯ মাস ধরে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব সাজিয়েছে। এর মধ্যে ৩০টিতে দলগুলো—বিএনপি থেকে জামায়াত—প্রায় একই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমন ঐক্যমূলক চিত্র খুব কমই দেখা যায়।

আমার কাছে যেটা সবচেয়ে আকর্ষণীয় মনে হয়েছে, তা হলো উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব। ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষ—এটি বাংলাদেশে ক্ষমতার ভারসাম্য ও সংলাপের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।

হ্যাঁ, বিএনপির আপত্তি আছে। কিন্তু মতভিন্নতার মধ্যেই তো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।

ইউনূস তাঁর ভাষণে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বললেন—২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের আত্মত্যাগ যেন আমরা ছোট ভিন্নমতের কারণে মূল্যহীন না করি। এটি আমাদের সবার মনে রাখা উচিত।

আর অর্থনীতির কথা? অবাক করার মতোই সত্য—বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে, বিশেষ করে লালদিয়া টার্মিনাল প্রকল্পে ৫৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা বাংলাদেশের সামর্থ্যকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরবে।

ফেব্রুয়ারির ভোট তাই শুধু নির্বাচন নয়—একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্তও।


 স্টাইলজাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে: জুলাই জাতীয় সনদের মূল পয়েন্ট, উচ্চকক্ষ গঠন, রাজনৈতিক অবস্থান ও অর্থনৈতিক প্রভাব

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন গণভোট একই দিনে আয়োজন করা হবে—এ ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এতে দেশের রাজনৈতিক কাঠামো, বিশেষ করে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন ও সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে।

গণভোটে কী প্রশ্ন থাকবে?

গণভোটে একটিমাত্র প্রশ্ন উপস্থাপন করা হবে, যা চারটি মূল বিষয়ে জনগণের মতামত জানতে চাইবে:

1.  তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন

2.  দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ এবং ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষ

3.  ৩০টি ঐকমত্যপূর্ণ সাংবিধানিক সংস্কার

4. অন্যান্য সংস্কার দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন

উচ্চকক্ষ কীভাবে গঠিত হবে?

1. PR (Proportional Representation) পদ্ধতিতে

2. দলগুলোর মোট ভোটসংখ্যা অনুযায়ী আসন বণ্টন

3. উচ্চকক্ষ ছাড়া সংবিধান সংশোধন সম্ভব হবে না

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির অবস্থান

1.  বিএনপি PR পদ্ধতির বিরোধী

2. জামায়াত নির্বাচন-পূর্ব গণভোট চায়নি—এ দাবি বিবেচনা করা হয়েছে

3. এনসিপির কিছু দাবি মানা হয়নি

জুলাই জাতীয় সনদের ৩০টি ঐকমত্যপূর্ণ প্রস্তাব

এর মধ্যে রয়েছে—বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসীমা, নারী প্রতিনিধিত্ব, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা, জরুরি অবস্থা, ভাষা ও নাগরিক পরিচয়বিষয়ক সংশোধন।

অর্থনৈতিক প্রভাব

1.এফডিআই বেড়েছে ১৯.১৩%

2. লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে ৫৫০ মিলিয়ন ডলারের ইউরোপীয় বিনিয়োগ চুক্তি

3. ব্যাংকিং খাত পুনরুদ্ধারের পথে

কেন এই সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ?

এই নির্বাচন ও গণভোট একদিনে হওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক রূপান্তরের বড় মাইলফলক, যা নির্ধারণ করবে দেশ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের পথে যাবে কি না।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ