জন্ম ১৯৪৫ সালে।
১৯৬০ সালে দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সেই বিয়ে হয় তার।
বিয়ের পাঁচ বছর পর, ১৯৬৫ সালে স্বামী জিয়াউর রহমানকে যেতে হয় ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধে—যেখানে মৃত্যুর সম্ভাবনা ছিল প্রতিনিয়ত। একই বছরে জন্ম নিলেন তাদের বড় সন্তান। এরপর ১৯৬৯ সালে জন্ম নিলেন ছোট সন্তান।
১৯৮২ সালে বয়স ৩৭। সামরিক স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে তাকে ঘর থেকে রাস্তায় আসতে হলো। টানা ১০ বছর আপোষহীন সংগ্রাম; কোনো প্রলোভন তাকে দমাতে পারেনি। এই সময়ও তিনি হত্যার হুমকি, হামলা এবং কারাবরণ সবই সহ্য করেছেন।
১৯৯১ সালে, ৪৬ বছর বয়সে তিনি হন দেশের প্রধানমন্ত্রী। পাঁচ বছরে বিরোধী দলের কঠোর রাজনীতির মোকাবেলা করেও দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এরপর আসে ১/১১। এবার তাকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টায় দুই সন্তানকে টার্গেট করা হলো। কিন্তু তিনি শুধু দুই সন্তানের মা নন—দেশকে ভালোবাসার জায়গা তার কাছে আরও উঁচু ছিল। তাই সন্তানকে ত্যাগের কষ্ট নিয়েও দেশকে রক্ষা করতেই মন দিলেন। ১/১১ তাই সফল হয়নি, দেশও একটি বড় বিপদ থেকে রক্ষা পায়।
যদিও ১/১১-এর অপচক্র কিছুটা ব্যর্থ হয়, দেশ পড়ে প্ল্যান ‘বি’-এর কবলে। একসময়ে তিনি সন্তানহারা হওয়ার বেদনাও সহ্য করেন। প্রায় ৭০ বছর বয়সে ছোট ছেলের মৃত্যু—যা তিনি কার্যালয়ে বন্দি অবস্থায় অঝোর ধারায় কেঁদে গ্রহণ করেছিলেন। তবুও আপোষ করেননি।
৭৩ বছর বয়সে তাঁকে একটি পরিত্যক্ত কারাগারে একাই বন্দি রাখা হয়। প্লাস্টার ভেঙে পড়ত, যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হতো না। তার কক্ষের নিচেই আদালত বসানো হতো মানসিক চাপ দেওয়ার জন্য। এভাবে ছয় বছর বন্দি থাকার পর ৭৯ বছর বয়সে আল্লাহ তাকে মুক্ত বাতাসে ফিরিয়ে দেন।
এই ছয় বছরেও তাকে সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
আজ ৮০ বছর বয়সে এসে মনে হয়—তার জীবনের প্রথম বিশ বছর ছাড়া বাকি ষাট বছর কেটেছে সংগ্রাম, নির্যাতন ও দুঃসহ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে।


0 মন্তব্যসমূহ