ওসমান হাদিকে গুলি



ওসমান হাদিকে গুলি

‘আমাকে শোরুমে নিয়ে যান, সব সত্য বেরিয়ে আসবে’—আদালতে মোটরসাইকেলের মালিক

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণাদানকারী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক মো. আব্দুল হান্নান আদালতে দাবি করেছেন, তিনি ওই মোটরসাইকেল আগেই বিক্রি করে দিয়েছেন। বিষয়টি প্রমাণের জন্য তিনি র‍্যাব ও পুলিশকে তাঁকে সংশ্লিষ্ট শোরুমে (বিক্রয়কেন্দ্রে) নিয়ে যেতে অনুরোধ করেছিলেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁকে সেখানে নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

গত শুক্রবার মতিঝিল এলাকায় গণসংযোগ শেষে ফেরার পথে বেলা ২টা ২৪ মিনিটে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা অবস্থায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁর অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।

এই ঘটনায় এখনো সন্দেহভাজন শুটারদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়েছিল, সেই মোটরসাইকেলের মালিক হিসেবে শনাক্ত মো. আব্দুল হান্নানকে গতকাল রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে র‍্যাব আটক করে।

আজ রোববার ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। রাজধানীর পল্টন থানার উপপরিদর্শক সামিম হাসান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট দিদারুল আলম এই আবেদনের শুনানি নেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী আদালতে বলেন, ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত হোন্ডা মোটরসাইকেলের ছবি ও তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। মোটরসাইকেলটিতে একটি নেমপ্লেট ছিল। সেই সূত্রে মালিকানার তথ্য যাচাই করে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশ আব্দুল হান্নানের নাম পান। গুলিবর্ষণকারীদের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মালিকের কোনো যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা জরুরি। সে কারণেই তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘সারা জাতি আজ উদ্বিগ্ন। সামনে নির্বাচন। এমপি প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতারা হুমকির মুখে। এই হত্যাচেষ্টার রহস্য উদ্ঘাটনের দিকে আজ সবার দৃষ্টি। দেশের ভবিষ্যৎ, জাতির স্বার্থ এবং নির্বাচন সুষ্ঠু করতে এই রহস্য উদ্ঘাটন অপরিহার্য।’

এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আব্দুল হান্নান বলেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তারের পর র‍্যাবকে বলেছিলাম, শোরুমে নিয়ে চলেন—তাহলে সব সত্য বেরিয়ে আসবে। কিন্তু তারা নেয়নি। থানায় এসেও পুলিশকে একই কথা বলেছিলাম। বলেছিলাম, তদন্ত করেন—সব বের হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি এই হোন্ডা মোটরসাইকেলটি মিরপুর মাজার রোড থেকে কিনেছিলাম। কিন্তু হাতের সমস্যার কারণে পরিবার আমাকে বাইক চালাতে নিষেধ করে। ফলে মোটরসাইকেলটি বাসায় পড়ে ছিল। নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় একটি শোরুমে সেটি বিক্রি করে দিই এবং মালিকানা পরিবর্তন করে দেব বলে জানাই। তারা দুই মাস আগে ফোন করেছিল, কিন্তু অসুস্থ থাকায় তখন মালিকানা পরিবর্তনের জন্য যেতে পারিনি।’

শুনানির সময় আব্দুল হান্নানের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। শুনানি শেষে আদালত তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ