আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি: ঢাকা উত্তাল — বাসে আগুন, ককটেল হামলা, কঠোর নিরাপত্তা

 



আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি: ঢাকা উত্তাল — বাসে আগুন, ককটেল হামলা, কঠোর নিরাপত্তা

ঢাকা — আজ সোমবার ঢাকায় একাধিক স্থানে বাসে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে; পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ঘটনা এবং নেওয়া নিরাপত্তা পদক্ষেপসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিচে দেওয়া হলো।

প্রধান ঘটনা

  • রাজধানীতে মোট ৩টি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।

  • শহরের বিভিন্ন স্থলে ৭ এলাকায় মোট ১০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে।

  • আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের তারিখ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে এবং আগামী ১৩ নভেম্বর আয়োজিত বলে জানানো আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা কঠোর করা হয়েছে।

ঘটনার বিবরণ

আজ সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির মিরপুর রোড (ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে) এক ব্যক্তিগত বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসে আগুন লাগে—হতাহত হয়নি। সকালে বন্দ্দা ও শাহজাদপুরে অতিদ্রুত সিরিজে দু’টি যাত্রীবাহী বাস আগুনে পুড়ে যায়—সেখানেও কেউ আহত হয়নি; ফায়ার সার্ভিস দ্রুত গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ককটেল বিস্ফোরণগুলি ঘটেছে মিরপুর, ধানমন্ডি (প্রতিটি দু’টি জায়গায়), বাংলামোটর, মোহাম্মদপুর, খিলগাঁওসহ অন্যান্যস্থানে। বেশির ভাগ ককটেল ছোঁড়ার সময় দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলযোগে হেলমেট পরে পালিয়েছে। কোনো ঘটনায় প্রাণহানি বা গুরুতর আঘাতের রিপোর্ট মেলেনি।

এক ক্ষেত্রে রাত ১১টার দিকে বাংলামোটরের জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে; সেখানে নিক্ষেপকারী কয়েকজনকে এনসিপির নেতা–কর্মীরা ধাওয়া করে ধরে পুলিশকে সোপর্দ করেন।

ঢাকার বাইরে মানিকগঞ্জে একটি স্কুলবাসে আগুন দিলোর ঘটনা এবং নেত্রকোনায় একটি বাড়ির ফটকে আগুন লেগেছে—এসবেরও অভিযোগ ওঠে।

তদন্ত ও প্রতিক্রিয়া

  • ডিএমপি জানিয়েছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এবং সম্ভাব্য দায়ীদের শনাক্তে কাজ চলছে।

  • একটি গ্রেফতারকৃত যুবককে প্রাথমিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে—তদন্ত চলছে।

  • আনন্দঘটনা বা বৈরী পরিস্থিতি যাতে না ছড়িয়ে পড়ে সেজন্য সব গির্জা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

নিরাপত্তা বাড়ানো ও অভিযান

  • ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রায় ১৭ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে, পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।

  • স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শহরের প্রবেশপথে চেকপোস্ট স্থাপন, হোটেল, হোস্টেল, মেস ও বসত এলাকায় তল্লাশি, গণপরিবহনে গোপন তল্লাশি ও বহুমাত্রিক টহল বাড়ানো হয়েছে।

  • আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক করেছে—বেআইনি মিছিলে অংশ নিলে বা ভাঙচুর করলে দায়ী প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সপ্তাহান্তে পুলিশের কাছে গণপরিবহনে সাদাপোশাকে গোয়েন্দা কাজ করা হয়েছে।



আরও ব্যবস্থা ও নিষেধাজ্ঞা

  • ট্রাইব্যুনাল, প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবন, বিচারপতি ভবন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ফটকসহ নির্দিষ্ট এলাকায় সমস্ত সভা-সমাবেশ, মিছিল ও গণজমায়েত তৎপরাতিরত না করা পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

  • জেলা পর্যায়ে জনসমাগম প্রশমনে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধ করা হয়েছে; তল্লাশি, টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।

আইজিপি পুলিশকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি বজায় রাখতে বলেছেন এবং নাগরিকদেরও সহযোগিতা কামনা করে বলেছেন — সন্দেহজনক কোনো তথ্য পেলে পুলিশকে জানাতে সবাইকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করা হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ