জামায়াতের দাবি: সুষ্ঠু না হলে নির্বাচন বাতিলের ঘোষণা দিন প্রধান উপদেষ্টা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে তা বাতিল করা হবে—প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে এমন ঘোষণা চেয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল বৈঠকে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এ দাবি জানান। বৈঠকের আয়োজন করে একশনএইড বাংলাদেশ ও প্রথম আলো।
তাহের বলেন, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে—মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে হবে। আলোচনায় সরকার প্রতিশ্রুতি দেবে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিতের, আর রাজনৈতিক দলগুলো আচরণবিধি মেনে চলার অঙ্গীকার করবে। এই প্রতিশ্রুতিগুলো টেলিভিশনে প্রচার করা হবে, যাতে জনগণ তা দেখতে পারে। “এরপরও যদি নির্বাচন সুষ্ঠু না হয়, তাহলে প্রধান উপদেষ্টা যেন ঘোষণা দেন—এই নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন দেওয়া হবে,” বলেন তাহের।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে। এ প্রসঙ্গে তাহের বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো আন্তরিক হলে এবং প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। “সুষ্ঠু নির্বাচন হলে যারা জয়ী হবে, তাদের গলায় মালা পরাবে জামায়াত,” যোগ করেন তিনি।
জামায়াত নেতা বলেন, গত ৫৪ বছরে দেশের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়া। তাই এবার আচরণবিধি মানা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রদর্শনের ওপর তিনি গুরুত্ব দেন। “সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের ভেতর পরিবর্তন আনতে হবে,” বলেন তাহের।
দেশে নেতৃত্বের সংকট আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতীতের সরকারগুলো জনআকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কাজ না করে দুর্নীতি ও বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। তবে জুলাই অভ্যুত্থানকে তিনি একটি ব্যতিক্রম হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “এই অভ্যুত্থানে ৮০ শতাংশ মানুষই ছিলেন কৃষক, শ্রমিক ও দিনমজুর, অথচ তাদের পরবর্তীতে উপেক্ষা করা হয়েছে।”
সভায় এক প্রশ্নের জবাবে তাহের বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। “দুর্নীতি রোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা গেলে দারিদ্র্য অনেকটাই কমে যাবে,” তিনি মন্তব্য করেন।
গোলটেবিল বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সভা পরিচালনা করেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির। অনুষ্ঠানে একশনএইডের নারী অধিকার লিড মরিয়ম নেছা নয়টি জেলায় আয়োজিত পূর্ববর্তী আলোচনার সুপারিশ তুলে ধরেন।
.png)
0 মন্তব্যসমূহ